হ্যালো ! বন্ধুরা কেমন আছো সবাই , আশা করি তোমরা সবাই খুভি ভালো আছো আজগে আমি কিছু বাংলা কবিতা এনেচি যা কবিতা গোনো Kazi Rahnuma Noor দুয়া লাকাহুয়া আশা করি কি আপনাদের খুব হয় ভালো লাগবে এই বাংলা কবিতা গোনো অরে প্লিজ একটা লাইক আর একটা কমেন্ট কোরে সাথে শেয়ার ও করে দেবে এই বাংলা সুন্দর কবিতা গোনো… KOBITAOAKHINI.COM
অনিত্য (কাজী রাহনুমা নূর)
“জীবনের একটা সময়ে দাঁড়িয়ে সব কিছুই অপ্রয়োজনীয় মনে হয়
চেনা কাপে ধোঁয়া ওঠা চা, পানির গ্লাসে ভাসতে থাকা চুল,
চলার পথে ছড়িয়ে থাকা ভুল চামড়া ওঠা কালসিটে দুই পা।
উঠোন রোদে পুড়তে থাকা শাড়ি খুকীর গালের মিষ্টি দুটা,
টোল চুলার ওপর সুগন্ধি তরকারি, দাদীর ডাকে আদুর বাদুর কোল।
হারিয়ে যাওয়া মায়ের ছেঁড়া আঁচল।
এক শালিকের দুঃখ ভেজা শ্লোক জীবন রে তুই কি চাস এবার বল?
ভাবিস না, কি বলবে পাড়ার লোক।,
বাবার ডাকে ছুটত যে দুই ঝুঁটি আজ কেন সে ঝিমোয় দুপুর রাত আলুর
ঝোলে তাওয়ায় সেঁকা রুটি আকাশজুড়ে চাল ধোয়া প্রভাত।
মাঝেমাঝে বেখেয়ালি মনে কে যেন খুব বাজায় জোরে শিস কাবার্ড ভরা
মসলা মাখা আদর ফিসফিসিয়ে বলে ‘ ভালো থাকিস’ সবই বুঝি মায়া?
সবই জাদু এই বুঝি খুব খাবো এক ঝাঁকুনি মাটির ঘরে শুয়েই উঠবো
জেগে হাত নেড়ে খুব বাজাবো ঝুনঝুনি মা ডাকবেন, ‘আয় রে নুমন মণি’।
অনুভবে তুমি (কাজী রাহনুমা নূর)
“তোমার সাথে হয়নি মনের ভাব তবুও যখন একলা থাকি হলুদ পাতায় সবুজ
আঁকি তুলির স্ট্রোকে আটকে থাকে তোমার হাতের ছাপ,
তোমার সাথে হয়নি মনের ভাব। দুষ্ট চোখে আলোর ঝিলিক,
নাকের ডগায় প্রেমের লিরিক স্কুলে যাবার পথের বাঁকে দাঁড়িয়ে
থাকা ছায়াটাকে দেখেও কেমন আনমনেতে এড়িয়ে চলার ভুল বুকের
ভেতর ধুকপুক ধুক জোনাক পোকার হুল।
ছাদে কাপড় নাড়ার ফাঁকে মনে হত কেউ কি ডাকে উদাস চোখে দেখে
নিতাম নীচের খোলা জানলাটাকে হঠাত করেই মনটা জুড়ে ঘটত হুলস্থুল।
বুকের ভেতর ধুকপুক ধুক জোনাক পোকার হুল। কিশোর বেলা কেটেই
গেল মনের সাথে আড়ি কেটে তুমি ও বোধহয় বোকাই ছিলে। অভিমানের মশলা
বেটে প্রেমের মানেই বদলে দিলে। রামধনু রং হু হু বিকেল দিচ্ছে প্রবল চাপ।
তোমার সাথে হয়নি মনের ভাব। কারণটা খুব সাদাসিধে নিজকে যেন বলি নিজে ‘ভালোবাসি’
এই কথাটি বলার ছিল অভাব। তোমার সাথে হয়নি মনের ভাব।”
কাঁদবে তুমি (কাজী রাহনুমা নূর)
“আমি মরে গেলে কদিন কাঁদবে তুমি ?
একদিন, দুই দিন? দশ দিন বা মাস?
না কি বছর? তোমার খুব কাছ ঘেসে আর কেউ বসে না ঠান্ডা ডাল টা দৌড়ে
গরম করে পাতে বেড়ে দেয় না পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের
নখটা কাটতে গিয়ে তুমি ব্যাথা পাচ্ছো এই ভেবে উফ বলে গুংয়ে ওঠে না কোন কণ্ঠ টের পাও ?
যে মানুষটা তোমার চুলে আদরের আঙ্গুল বোলাতো মোরা আর জনমে হংস মিথুন ছিলাম
গানটির সাথে বেসুরো গলা মেলাতো গরম চায়ের সাথে ডালপুরি
বা ছাঁচ পিঠা বানিয়ে তোমার ঘরে ফেরার পথের সাথে কাটাকুটি খেলতো।
সে নেই কোত্থাও। ড্রয়িং রুমে ঝোলানো পেইন্টিং এ ,
সোফার গায়ের কাপড়ে ফুটে থাকা ফুলে দরজার পাপশের পাশে অপেক্ষমান দুই
ফিতের সেন্ডেলে, কোত্থাও নেই সে । রান্নাঘরে মশলার ঝাঁজে কেউ
কেশে উঠছে না প্রতি ঘন্টায় ফোন করে জীবন অতিষ্ঠ করছে না বৈশাখে লাল চুড়ি চাই,
এমন বায়নায় মুখ হপ করে উপোস করছে না কেউ
এত এত নিঃশব্দতার ভিড়ে খুঁজে ফেরো কোন গোপন ফিসফাস ?
পিঠে বেড়ে ওঠা বিষফোঁড়া টার মুখ খুলতে নরম তুলোয়
বোরিক পাউডারের সেঁক দেয় আর কেউ ?
শুতে এসে পাশের বালিশে লেপ্টে থাকা চুলে চেনা গন্ধ খুঁজেছ কখনো সখনো ?
রাতের আকাশে জোছনার চাঁদ দেখলে কেন যেন মৃত্যুর সাধ জাগতো তোমার আজো কি,
একা , কোন ভরা পূর্ণিমায় চাঁদের বুড়ির সাথে ঝগড়ায় মেতে ওঠো তুমি ?
সত্যি করে বলো তো আমি মরে গেলে ঠিক ক’দিন কাঁদবে তুমি ?”
কবিতা – আবৃত্তি (কাজী রাহনুমা নূর)
“মিষ্টি স্বপ্ন গুলোকে ছোঁবে বলে টলো মলো পায়ে সিঁড়ি টপকাচ্ছে
মেয়েটা কখনো বাবার হাত ধরে কখনো বা মায়ের এরপর
এলো বন্ধুদের হাত বাড়াবার পালা সকুল,
কলেজ ,কবিতা , গান বিতর্ক কত কত স্বপ্নের হাতছানি হই হুল্লুর চাঁদের
গাড়ি কু ঝিক ঝিক চুড়ি শাড়ি চা সিঙ্গারা
শিল্পকলা দু আঙুলে শিস বাজিয়ে দম না ফেলে কথা বলা।
জীবন এক ছট্ফটে ঘাস ফড়িং।
এক সকালে মেয়েটি বৃষ্টি শূণ্য আকাশে দেখলো রংধনু
“যাবি রে মেয়ে আমার সাথে মন নদীতে আসছে
জোয়ার দৃষ্টি আঠায় আটকে পড়া মাকড়শাটা
দিনে রাতে বুনছে সুতো গুনছে প্রহর তোর আঙুলে আঙুল ছোঁয়ার।”
রংধনুর রঙ্গে পা পিছলে গড়িয়ে পড়তে পড়তে মেয়েটি দেখলো
সাজানো ঘর ফ্রিজ ভরা ঠান্ডা পানি নানান নামের চাদরে ঢাকা
কিছু প্রিয় মুখ রাতজাগা চোখে কালো মেঘের তুলি তুলতুলে ছোট বড় হাতের
জাদুতে পুরনো ওই হাতগুলো কোথায় যে মিলিয়ে গেলো তার সাথে হারালো স্ব
প্ন সিড়ির ম্যাপটি ও মেয়েটি পরাবাস্তবতার জীবন ছেড়ে নারী হয়ে উঠলো।”
প্রতিদান – (জসীমউদ্দীন)
“আমার এ ঘর ভাঙ্গিয়াছে যেবা,
আমি বাধি তার ঘর, আপন করিতে কাঁদিয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর।
যে মোরে করিল পথের বিবাগী; পথে পথে আমি ফিরি তার লাগি;
দীঘল রজনী তার তরে জাগি ঘুম যে হয়েছে মোর; আমার এ ঘর ভাঙ্গিয়াছে যেবা,
আমি বাধি তার ঘর । আমার একুল ভাঙ্গিয়াছে যেবা আমি তার কুল বাধি,
যে গেছে বুকেতে আঘাত হানিয়া তার লাগি আমি কাঁদি;
সে মোরে দিয়েছে বিষ ভরা বান, আমি
দেই তারে বুক ভরা গান; কাটা পেয়ে তারে ফুল করি
দান সারাটি জনম ভর, আপন করিতে কাদিঁয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর ।
মোর বুকে যেবা কবর বেধেছে আমি তার বুক ভরি,
রঙ্গীন ফুলের সোহাগ জড়ান ফুল মালঞ্চ ধরি।
যে মুখে সে নিঠুরিয়া বাণী, আমি লয়ে সখী, তারি মুখ খানি,
কত ঠাই হতে কত কি যে আনি, সাজাই নিরন্তর,
আপন করিতে কাদিয়া বেড়াই যে মোরে করিয়াছে পর। “
হায় চিল
“হায় চিল, সোনালী ডানার চিল,
এই ভিজে মেঘের দুপুরে তুমি আর কেঁদো নাকো
উড়ে উড়ে ধানসিঁড়ি নদীটির পাশে!
তোমার কান্নার সুরে বেতের ফলের মতো
তার ম্লান চোখ মনে আসে! পৃথিবীর রাঙা রাজকন্যাদের
মতো সে যে চলে গেছে রূপ নিয়ে দূরে; আবার তাহারে কেন ডেকে আনো?
কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে!
হায় চিল, সোনালী ডানার চিল, এই ভিজে মেঘের দুপুরে
তুমি আর উড়ে-উড়ে কেঁদো নাকো ধানসিড়ি নদীটির পাশে!”
